Headline : |
ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে সংগৃহীত
নানাবিধ অসঙ্গতির চিত্র তুলে ধরে পদত্যাগ করলেন প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক
|
![]() সদ্য বিদায়ী সেলিম উদ্দীন স্যারের পোস্ট সামাজিক ও আর্থিক অমর্যাদা এবং কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার চিত্র তুলে ধরে পদত্যাগ করলেন প্রাথমিকের একজন প্রধান শিক্ষক (৩৪তম বিসিএস ননক্যাডার)। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরাধিন মাঠ পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষকগণ হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হন তা হাজার হাজার নয়, লাখ লাখ উদাহরণ আছে বাংলাদেশে। কেউ মুখ খুলে বলতে পারেন, আবার কেউ বা ভয়ে সম্মান রক্ষায় ভুলেও বলার সাহস পানন না। সাহস করে নিজের চাকুরীজীবনের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরে বিদায় নিলেন সদ্য পদত্যাগ করা ৩৪তম বিসিএস নন ক্যাডার থেকে নিয়োগ পাওয়া মেধাবী প্রধান শিক্ষক (বর্তমানে জনতা ব্যাংকে) জনাব সেলিম উদ্দীন ভাই। এমন অবস্থা চলতে থাকলে প্রাথমিক শিক্ষায় কোন মেধাবী আসবেন না, আসলেও অন্যত্র সুযোগ পেলে চলে যাবেন ধিক্কার জানিয়ে, এটায় বাস্তবতা। সময় এসেছে প্রাথমিক শিক্ষার সার্বিক ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের। সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ জায়গায় সবার মানসিকতার পরিবর্তন না হলে মুখ থুবড়ে পড়বে প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষকদের সামাজিক অর্থনৈতিক মর্যাদা (প্রধান ও সহকারি, ১০ম ও ১১তম গ্রেড প্রদান করে) প্রদান না করলে, প্রাথমিক শিক্ষার সকল অফিস ও জনবল দুর্নীতিমুক্ত করতে না পারলে কখনই সরকারের কাঙ্খিত লক্ষ্য বাস্তবায়ন হবে না। সদ্য বিদায়ী সেলিম উদ্দীন স্যারের পোস্টটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থেকে পদত্যাগ করলাম ৷ বুকের ভিতর একটু হু হু কষ্ট ৷ নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সরকারের ইচ্ছাই এ পেশায় এসেছিলাম (৩৪তম বিসিএস ননক্যাডার) ৷ পারিবারিক চাপে এ চাকুরিতে এসেছিলাম ৷ স্ত্রী সন্তান ও মাকে নিয়ে একসাথে থাকতে চেয়েছিলাম ৷ কিন্তু কিছু অফিসারের দুর্নীতির কারনে পদায়ন করা হয়েছিলো দুর্গম চরে যদিও আমার নিজের এলাকার অনেক স্কুল ফাঁকা ছিলো ৷ ভেবেছিলাম হয়ত বদলী হতে পারবো ; কিন্ত প্রাথমিকের বদলী যেন হিমালয়সম কঠিন বিষয় ৷ যাহোক স্কুলে যোগ দিয়ে কষ্ট আরো বেড়ে গেলো ৷ কারন স্কুলে নেই কোন অবকাঠামো আর শিক্ষক সংকট ৷ তবু কিছু পরিবর্তনের জন্য সচেষ্ট হলাম ৷ ভালোলাগার চেষ্টা করতে লাগলাম ৷ কিন্তু বারবার হোচট খেতে হলো ৷ চার শিক্ষক থেকে দুজন ডিপিএডে গেলো ৷ রইলাম দুজন ৷ আর স্ত্রী সন্তান থেকে দুরেই রইলাম সাথে বোনাস হলো প্রতিদিন যাতায়াত খরচ ২০০ টাকা সাথে যাওয়া আসাতে ৩-৪ ঘন্টা ৷ পরিবর্তনের চেষ্টায় দুমুঠো খাবার খেতে কেনা হলো গ্যাসের চুলা ৷ কিছুটা কষ্ট লাঘব হলো ৷ চলছিলো দিনানিপাত ৷ অবশেষে মুক্তি মিললো জনতা ব্যাংকে জব হয়ে ৷ একমাত্র আমার মতো ভুক্তভোগী ছাড়া সবাই বলে ব্যাংকের চেয়ে স্কুল শিক্ষক ভালো ৷ কিন্তু আমি জানি এখানে কতটা ভালো ৷ তাইতো ১ বছর ৫ মাসের চাকুরির সমাপ্তি ঘটালাম আজ ৷ অদ্ভুত নিয়মের বেড়াজাল আর পদোন্নতিহীন এ জব মেধাবীদের কিভাবে আকৃষ্ট করবে - এটাই আমার প্রশ্ন ৷ এ লেখায় কেউ কষ্ট পেলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ৷ আমার জন্য দোয়া করবেন ৷ সংগ্রহে: মো. ফারুক হোসেন সহকারি শিক্ষক ১২নং গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর। |