মাসিক শিক্ষাতথ্য পত্রিকা ২০০৮ সাল থেকে প্রিন্ট ভার্সনে প্রকাশিত হচ্ছে যার রেজি: ডি.এ. নাম্বার: ৫০৮৫, ঢাকা
প্রিন্টিং সংস্করণ
সোমবার ২০ মে ২০২৪ ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ভাষা আন্দোলনের সিঁড়ি বেয়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের
ড. হাবিবুর রহমান খান
Published : Saturday, 26 March, 2022 at 11:25 AM, Update: 26.03.2022 11:48:03 AM
দৈনিক শিক্ষাতথ্য, ঢাকা (২৬ মার্চ, ২০২২) :-
মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইকে কেন্দ্র করে অভ্যুদয় ঘটে একটি স্বাধীন দেশ বাংলাদেশের। বিশ্বে আমরাই একমাত্র এই গৌরবের অধিকারী। ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু আজো অমলিন ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। ১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে আমাদের জাতীয় জীবনের সব জাগরণ, স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের চেতনার মূলে জড়িয়ে আছে এ মাসের স্মৃতি। স্বাধীনতা আন্দোলনের উৎস ধারা ফেব্রুয়ারী মাসের আগমনে যাদের নাম সবার আগে স্মরণে আসে তারা হলেন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার ও শফিউর। মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে পরিচিত এই কয়জন যুবকসহ আরো কয়েকজনকে প্রাণ উৎসর্গ করতে হয়েছিল ঐ সময়।
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে একেবারে হারিয়ে যেতে বসেছেন এমন একজন ভাষা সৈনিক হলেন শ্রমিক নেতা আবিদুর রহমান খান

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে একেবারে হারিয়ে যেতে বসেছেন এমন একজন ভাষা সৈনিক হলেন শ্রমিক নেতা আবিদুর রহমান খান

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের সূত্র অন্বেষণ করতে গেলে সবার আগে যার নাম চলে আসে তিনি হলেন জ্ঞানতাপস বহু ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ। তাঁকে ভাষা আন্দোলনের উৎস পুরুষ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ১৯৪৭ সালের ৩ আগষ্ট তিনি ‘দ্যা ল্যাংগুয়েজ প্রবলেমস্ অব পাকিস্তান’ বা ‘পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ রচনা করেন, যা তৎকালীন ‘কমরেড’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে তিনি বাংলা ভাষাকে বাদ দিয়ে উর্দু ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করা হলে তা রাজনৈতিক পরাধীনতার নামান্তর হবে বলে মত প্রকাশ করেন। তাঁর এ বক্তব্যে তৎকালীন বাঙ্গালী সমাজ উদ্দীপ্ত হয়।

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস পর্যালোচনা করতে গেলে ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর পর যার নাম আসে তিনি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেম এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘তমদ্দুন মজলিস’ এর নাম। তমদ্দুন মজলিস প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ১৭ দিন পর ১ সেপ্টেম্বর। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। তমদ্দুন মজলিস ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি পুস্তিকা আকারে ভাষা আন্দোলনের ঘোষণা পত্র প্রকাশ করে। ১৮ পৃষ্ঠার এ পুস্তিকার নাম ছিল ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’। 

প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তিকাটিতে অধ্যাপক আবুল কাসেম, কাজী মোতাহার হোসেন, ও আবুল মনসুর আহমেদের ৩টি প্রবন্ধ অন্তর্ভুক্ত ছিল। ঘোষণা পত্রটির মূল বিষয় বস্তু ছিল (১) পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা হবে ২টি বাংলা ও উর্দু।  (২) পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার মাধ্যম ও অফিস-আদালতের ভাষা হবে বাংলা। উর্দু ও ইংরেজি হবে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাষা। (৩) রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবী মেনে না নেওয়া হলে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান আলাদা হবে। (৪) বাংলার দাবী না মানা হলে লাহোর প্রস্তাব অনুসারে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন অথবা স্বাধীকার আদায়ের পথ প্রশস্ত হবে। (৫) বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে না নেওয়া হলে দেশবাসীকে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অধ্যাপক আবুল কাসেমের ১৯ আজিমপুরস্থ বাস ভবনে এ ঘোষণা পত্র পাঠ অনুষ্ঠানে সেদিন উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এ কে এম আহসান, নূরুল হক ভূঁইয়া, শামসুল আলম, আবদুল মতিন খান চৌধুরী, ফজলুর রহমান ভূইয়া, কবি মোফাখ্খারুল ইসলাম প্রমূখ। তমদ্দুন মজলিসের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনে তৎকালে আরো যারা যুক্ত ছিলেন আবদুল খালেক (আইজিপি), ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হুদা, ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, আবুল মনসুর আহমেদ ও কবি ফররুখ আহমেদ। ১৯ আজিমপুরের বাড়িটি থেকেই প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমের নির্দেশনায় ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী যাবতীয় কর্মসূচি পরিচালিত হতো বিধায় বাড়িটিকে ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার বলা হতো তৎকালে।

শুরুর দিকে  তমদ্দুন মজলিস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক একটি সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে থাকে। সময়ের প্রয়োজনে সংগঠনের অফিস পরবর্তীতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের রশীদ বিল্ডিংয়ে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের গোয়েন্দা নজরদারির কারণে অফিসটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে স্থানান্তরের প্রস্তাব করেন সংশ্লিষ্ট হলের তৎকালীন ভিপি মুহাম্মদ তোয়াহা। কিন্তু বিবিধ জটিলতা এড়াতে অফিসটি পূনরায় ভাষা আন্দোলনের জনক অধ্যাপক আবুল কাসেমের ১৯ আজিমপুরস্থ বাস ভবনেই পূনঃস্থাপিত হয়। তবে সার্বিক  কর্মকাণ্ড ফজলুল হক মুসলিম হলেই চলতে থাকে। 

১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজের ছাত্রাবাস নূপুর ভিলায় জ্ঞানতাপস ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিম্পোজিয়ামে ভাষা আন্দোলনের কর্মপন্থা নির্ধারিত হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে সাংগঠনিক পক্ষ এবং পুরো অক্টোবর মাস জুড়ে গণসংযোগ পালন করে তমদ্দুন মজলিস।  ঐ বছরের ৫ নভেম্বর প্রকাশ্য জনসভায় বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবি উত্থাপন করা হয়। কাজী মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনকে প্রদত্ত এক সংবর্ধনা সভায় তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব করেন। ১২ নভেম্বর ফজলুল হক মুসলিম হলের সাহিত্য সভায় তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাবিবুল্লাহ বাহার, বেসামরিক সরবরাহ মন্ত্রী নূরুল আমিন, কৃষি মন্ত্রী সৈয়দ মুহাম্মদ আফজাল ভাষা আন্দোলনের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করেন। 

১৯৪৭ সালের ১৪ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের শাসক খাজা নাজিমুদ্দিনের নিকট তমদ্দুন মজলিস এক স্মারকলিপি প্রদান করে। একই ভাবে মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির নিকট হাজার হাজার স্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি দেয়। ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় অধ্যাপক আবুল কাসেম ও আবু জাফর শামসুদ্দিনের সাথে প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সভাপতি মাওলানা আকরম খাঁ’র আলোচনা হয়। আলোচনায় মাওলানা আকরম খাঁ রাষ্ট্র ভাষা বাংলা প্রশ্নে তাদের সাথে একমত পোষণ করেন।  ১৯৪৭ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত করাচিতে একটি শিক্ষা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সম্মেলনে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ফজলুর রহমান  উর্দুকে পাকিস্তানের লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা (সাধারন ভাষা) করার প্রস্তাব করেন। ৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলতলা প্রাঙ্গণে অধ্যাপক আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে ৩ হাজার ছাত্র-জনতার এক সমাবেশ শেষে মিছিল সহকারে সচিবালয় ঘেরাও করে। দাবি একটাই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে হবে। ঘেরাও কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মুনির চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি ফরিদ আহমেদ, অধ্যাপক এ কে এম আহসান,  ছাত্রনেতা আবদুর রহমান চৌধুরী,  কল্যাণ দাসগুপ্ত ও এস আহমেদ প্রমূখ। সমাবেশে শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করেন ফরিদ আহমেদ। উল্লেখ্য তৎকালে ‘মর্ণিং নিউজ’ নামক একটি পত্রিকা বাঙ্গালী বিরোধী প্রচার প্রপাগাণ্ডার পুরোধা ছিল। উক্ত সমাবেশে পত্রিকাটির ভূমিকারও নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়।

পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে ভূখণ্ডগত ব্যবধান যেমন ছিল তেমনি মানসিকতাগত দূরত্বও ছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাস করলেও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ চলতে থাকে। রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকদের একচোখা মনোভাব স্বাভাবিকভাবেই সবাইকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরই দূরদর্শী ব্যক্তিরা এর ভবিষ্যত নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। এটি ছিলো পাকিস্তানোত্তর এদেশে প্রথম হরতাল। তমদ্দুন মজলিস ও পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্র লীগ যৌথভাবে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং পালন করে। এর আগে হরতাল পালনের লক্ষ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারী তমদ্দুন মজলিস ও পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্র লীগ এক যৌথ সভায় ঐতিহাসিক সীদ্ধান্তটা গ্রহণ করে। 

১১ মার্চ হরতালের দিন “বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা হবে” মর্মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কর্মপরিষদের একটি লিখিত চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এটি ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রথম বিজয়। ১৯৫২ সালের আগ পর্যন্ত প্রতি বছর ১১ মার্চকে ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হতো। 
কিন্তু ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে এক জনসভায় খাজা নাজিমুদ্দিন চুক্তি ভঙ্গ করে ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ মর্মে এক  ঘোষণা দিয়ে বসেন। ফলে ভাষা আন্দোলন নতুন একটি পর্যায়ে প্রবেশ করে।শুরু হয় নতুন অধ্যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ঘোষণার প্রতিবাদে ধর্মঘট পালিত হতে থাকে। ঐ ঘোষণার এক মাসেরও কম সময়ে ভাষা আন্দোলন তার চূড়ান্ত পরিনতি লাভ করে এবং ২১ ফেব্রুয়ারির বিয়োগান্তক ঘটনার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সাফল্য লাভ করে। 
এর পূর্বে ৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৩১ জানুয়ারি মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ঢাকা বার লাইব্রেরিতে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে মাওলানা ভাষানীকে আহ্বায়ক করে ৪০ সদস্য বিশিষ্ট একটি সর্বদলীয় কর্মপরিষদ গঠিত হয়। অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন : আবুল হাশিম, শামসুল হক, আবদুল গফুর, আবুল কাশেম, আতাউর রহমান খান, কামরুদ্দিন আহমদ, খয়রাত হোসেন, আনোয়ারা খাতুন, আলমাস আলী, আবদুল আওয়াল, অলি আহাদ, শামছুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ তোয়াহা, সৈয়দ আবদুর রহিম, খালেক নেওয়াজ খান, কাজী গোলাম মাহবুব, মির্জা গোলাম হাফিজ, মজিবুল হক, হেদায়েত হোসেন চৌধুরী, আনোয়ারুল হক খান, গোলাম মওলা প্রমূখ। 

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা লাভের পর তমদ্দুন মজলিস মূলত একটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। মূল উদ্দেশ্য ছিল ‘বিপ্লবী ইসলামি আদর্শের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, শিক্ষানীতি প্রভৃতি বিষয়ে জনগনকে সঠিক ধারণা দেওয়া’। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর অপরিনামদর্শী কর্মকাণ্ডের কারণে সংগঠনটি সরকার বিরোধী ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের তরুন শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাসেমের নেতৃত্বে ডান বাম সব ধারার বুদ্ধিজীবী তথা কবি,সাহিত্যিক, লেখক, শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ভাষা আন্দোলনে নেমে পড়েন। 

ভাষা আন্দোলনে অগণিত জানা-অজানা মানুষ অংশ গ্রহণ করেছেন। ইতিহাসের পাতা থেকে অনেকেই চিরতরে হারিয়ে গেলেও যাদের নাম বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া যায় তারা হলেন: ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ, প্রফেসর নূরুল হক ভূঁইয়া, মোহাম্মদ তোয়াহা, মৌলভী ফরিদ আহমেদ, আবুল মনসুর আহমেদ, কাজী মোতাহার হোসেন, মাওলানা আকরম খাঁ, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, কবি ফররুখ আহমেদ,  আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ, অধ্যাপক আবুল গফুর, আব্বাস উদ্দিন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আজিজ আহমেদ,  নঈমুদ্দিন আহমদ, অলি আহাদ, আবদুল মতিন খান, প্রফেসর মুনির চৌধুরী, সরদার ফজলুল করিম, প্রফেসর জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, প্রফেসর অমরেন্দ্র চক্রবর্তী, গাজীউল হক, আবদুর রহমান চৌধুরী,  আবুল কালাম শামসুদ্দিন, কবি মাহফুজ উল্লাহ, কবি মফিজ উদ্দিন, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, আবুল হাশিম,  শামসুল হক,আতাউর রহমান খান, কামরুদ্দিন আহমদ, হবীবুল্লাহ বাহার, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, হাসান ইকবাল, অধ্যাপক গোলাম আজম, গোলাম মাহবুব, রফিকউল্লাহ চৌধুরী, শেখ আশরাফ হোসেন, ফরমান উল্লাহ খাঁ, সৈয়দ মোহাম্মদ আফজাল হোসেন, ন্যাপ নেতা মোজাফফর আহমদ, শ্রমিক নেতা আবিদুর রহমান খান, ড. মোজাফফর আহমদ, কবি জসিমউদদীন, ড. মুহাম্মদ এনামুল হক, কাজী আফসার উদ্দিন আহমেদ, জহুর হোসেন চৌধুরী, আবুল হাসনাত, প্রফেসর এ কে এম আহসান, কল্যাণ দাস গুপ্ত, এস আহমেদ, কবি মোফাখখারুল ইসলাম, আবদুল খালেক, নূরুল হুদা, খয়রাত হোসেন,  আনোয়ারা খাতুন, আলমাস আলী,  আবদুল আওয়াল, শামছুল হক চৌধুরী, সৈয়দ আবদুর রহিম, খালেক নেওয়াজ খান প্রমুখ। 
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে একেবারে হারিয়ে যেতে বসেছেন এমন একজন ভাষা সৈনিক হলেন শ্রমিক নেতা আবিদুর রহমান খান। তাঁর পৈতৃক নিবাস চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন শেকদি গ্রামে। মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে তিনি তৎকালে চিটাগং (বর্তমানে চট্টগ্রাম) অঞ্চলে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলেন। যার ফলশ্রুতিতে তিনি তৎকালীন পাকিস্তানী জান্তার পুলিশ বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে কুমিল্লা জেলে প্রায় এক মাস কারাবরণ করেন। তাঁর সুযোগ্য পুত্র নারায়ণগঞ্জ বারের প্রাক্তন সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সন্মানিত সদস্য সিনিয়র আইনজীবী আনিসুর রহমান দীপু ভাষা আন্দোলনে বাবার ঐতিহাসিক সংগ্রামী ভূমিকার কথা স্মরণ করে মাঝে মধ্যে আবেগে আপ্লূত হয়ে পড়েন। 

ড. হাবিবুর রহমান খান বিশিষ্ট শিক্ষা ও জনসংযোগবিদ


এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও প্রকাশকের পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনী।



সর্বশেষ সংবাদ
রোটারি ক্লাব গাজীপুরের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের স্কুলব্যাগ-শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
লক্ষ্মীপুরের মুজাহিদ ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক
লক্ষ্মীপুরের ওপি ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক
৪৬তম বিসিএস প্রিলিতে উত্তীর্ণ হলেন যারা, দেখুন তালিকা
সর্বাধিক পঠিত

  • ফেসবুকে আমরা
    বিশেষ জ্ঞাতব্য: বিজ্ঞাপন ও অনুদানের চেকটি Masik ShikshaTotthow নামে A/C Payee প্রদান করতে হবে। অথবা হিসাবের নাম: মাসিক শিক্ষাতথ্য (Masik ShikshaTotthow), হিসাব নাম্বার: ৩৩০২২৩৮৪, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, শিল্পভবন কর্পোরেট শাখা, ঢাকা”-তে অনলাইনে ক্যাশ/চেক জমা দেওয়া যাবে। তৃতীয়ত: ক্যাশ পাঠানো যাবে-বিকাশ: ০১৮১৯১৪৩৬৬৪, ০১৭১৫৬৬৫৫৯২। রকেট: ০১৭১৬২০৫৩০৪০। এজেন্ট ব্যাংকিং নাম্বার: ৭০১৭৫১১৭৬০৬২৭ (ডাচ-বাংলা ব্যাংক)।


    ● সাক্ষাৎকার
    ● শিক্ষা সংবাদ
    ● সারাদেশ
    ● জাতীয়
    ● রাজনীতি
    ● আন্তর্জাতিক
    ● সাহিত্য চর্চা
    ● চাকরীর তথ্য
    ● ব্যাংক-বীমা অর্থনীতি
    ● সম্পাদকীয়
    ● শুভ বাংলাদেশ
    ● সুধীজন কথামালা
    ● বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি
    ● প্রতিষ্ঠান পরিচিতি
    ● শিক্ষক কর্ণার
    ● শিক্ষার্থী কর্ণার
    ● সফলতার গল্প
    ● বিশেষ প্রতিবেদন
    ● নিয়মিত কলাম
    ● মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা
    ● অনিয়ম-দুর্নীতি
    ● ভর্তি তথ্য
    ● বিনোদন
    ● লাইফস্টাইল
    ● খেলাধুলা
    ● ধর্ম ও জীবন
    ● পাঠকের মতামত
    ● জন্মদিনের শুভেচ্ছা
    ● বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা
    ● শোকগাঁথা
    ● স্বাস্থ্যতথ্য
    ● শিক্ষাতথ্য প্রকাশনী
    ● টিউটোরিয়াল
    ● ইতিহাসের তথ্য
    ● প্রবাসীদের তথ্য
    ● অন্যরকম তথ্য
    ● শিক্ষাতথ্য পরিবার
    সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মাদ তছলিম উদ্দিন
    ২২৩ ফকিরাপুল (১ম লেন), মতিঝিল, ঢাকা থেকে সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত
    এবং প্রিন্ট ভার্সন : আলিফ প্রিন্টিং প্রেস, ২২১ ফকিরাপুল (১ম লেন), ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।
    ফোন: ৭১৯১৭৫৮, মোবাইল: ০১৭১৫৬৬৫৫৯২। বিজ্ঞাপন: ০১৮১৯১৪৩৬৬৪,
    ইমেইল: [email protected] (নিউজ এন্ড ভিউজ), ad.shiksha2008.gmail.com (বিজ্ঞাপন)